সদ্যপ্রয়াত সংগীত পরিচালক ফরিদ আহমেদ দেশের গায়ক, গায়িকা ও যন্ত্রশিল্পীদের দুঃসময়ে তাদের পাশে দাঁড়াতেন। তিনিই সবার আগে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতেন। তহবিল সংগ্রহের জন্য অনেক কণ্ঠশিল্পী ও সংগীতশিল্পীকে এক ছাতার নিচে নিয়ে আসতেন। তাকে নিয়ে স্মৃতি রোমন্থন করতে গিয়ে এসব কথা জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন গায়িকা রুনা লায়লা। আজ দুপুরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আবেগঘন একটি স্ট্যাটাসে স্মৃতির ঝাঁপি খুলে দিয়েছেন তিনি। তাঁর চোখে ফরিদ আহমেদ ছিলেন নিঃস্বার্থ এবং বড় হৃদয়ের একজন মানুষ।ফেসবুক স্ট্যাটাসের শুরুতেই নিজের গাওয়া ‘অন্তবিহীন এই পথচলা’র শিরোনাম লিখেছেন রুনা লায়লা। ‘ফেরারী সাইরেন’ ধারাবাহিক নাটকে ফরিদ আহমেদের সুর ও সংগীতে এটি গেয়েছিলেন তিনি।
এরপর রুনা লায়লা লিখেছেন, ‘জীবনের পথ অন্তহীন। তবে ফরিদ আহমেদের পথটা বেদনাদায়কভাবে শেষ হয়ে গেলো। অনেক শ্রুতিমধুর গান সুর করেছেন তিনি, সেগুলোর মধ্যে কয়েকটি গাওয়ার সৌভাগ্য হয়েছে আমার।
ফরিদ আহমেদ অসাধারণ একজন সংগীত পরিচালক ও সুরকার এবং চমৎকার একজন মানুষ ছিলেন বলে মনে করেন রুনা লায়লা। তিনি স্ট্যাটাসে আরও জানান, যেকোনো সংগীতশিল্পী ও কণ্ঠশিল্পী অসুস্থ হলে সবার আগে পাশে দাঁড়াতেন ফরিদ আহমেদ। অসুস্থ সংগীতশিল্পীদের চিকিৎসা ও হাসপাতালের ব্যয় মেটানোর সামর্থ্য না থাকলে তিনি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতেন।রুনা লায়লার কথায়, ‘কোনো কণ্ঠশিল্পী বা সংগীতশিল্পীর আর্থিক সহায়তার প্রয়োজন হলে ফরিদ আমাকে ফোন করে জানাতেন। আমরা তাদের জন্য তহবিল সংগ্রহ করতাম। তিনি সংগীতাঙ্গনে সহমর্মিতার উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন এবং সবাইকে সাহায্য করার জন্য বলতেন।
করোনা মহামারির সময় দেশের অনেক সংগীতশিল্পী কর্মহীন হয়ে পড়েন। তাদের মধ্যে অনেকের আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন ছিল। রুনা লায়লা ও ফরিদ আহমেদ এই সংগীতশিল্পীদের কল্যাণের ব্যাপারে একাধিকবার কথা বলেছিলেন। ফেসবুক স্ট্যাটাসে এসব তথ্য দিয়ে রুনা লায়লা বলেন, ‘অন্যদের সহায়তার জন্য তহবিল সংগ্রহের উদ্যোগে তিনি আমাদের অনেককে যুক্ত করেছিলেন।
রুনা লায়লা বলেন, ‘ফরিদ আহমেদ নিঃস্বার্থ এবং বড় হৃদয়ের একজন মানুষ ছিলেন। তাঁকে সুস্থ করে তোলা গেলো না। আজ আমরা সংগীতাঙ্গনের সবাই শোকাহত। তাঁর শান্তশিষ্ট চালচলন এবং প্রাণখোলা হাসির কথা আমাদের সবার মনে পড়বে। তিনি যেসব গান রেখে গেছেন সেগুলো শ্রোতাদের হৃদয়ে থেকে যাবে
এরপর ফরিদ আহমেদের আত্মার শান্তি কামনায় রুনা লায়লা বলেন, ‘তুমি অনেককে সুস্থ হয়ে উঠতে সহায়তা করেছো। সবার সম্মিলিত প্রার্থনায় নিশ্চয়ই জান্নাতে বিশেষ জায়গায় থাকবে তুমি।
ফেসবুক স্ট্যাটাসের শেষ লাইনে ফরিদ আহমেদকে ভাই সম্বোধন করে রুনা লায়লা লিখেছেন, ‘চির শান্তিতে থেকো আমার প্রিয় ভাই।
করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আজ (১৩ এপ্রিল) সকালে না ফেরার দেশে চলে গেছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত সংগীত পরিচালক ফরিদ আহমেদ। তার মৃত্যুতে সংগীতাঙ্গনে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। গীতিকার মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান, কণ্ঠশিল্পী ফাহমিদা নবী, সামিনা চৌধুরী, মমতাজ বেগম, মনির খানসহ অনেকে শোক প্রকাশ করেছেন।
More Stories
বাংলাদেশে আসছে শাহরুখের ( পাঠান )
বন্যার্তদের পাশে আমির খান আসামে
অশ্লীল মেসেজ করতেন পিকে! ব্রাজিলিয়ান মডেলকে