24/12/2024

SkbTv Channel Bangla News

জমি ভাগাভাগি হয়নি, তাই বাবার লাশও দাফন করেনি সন্তানরা

Spread the love

জমি ভাগাভাগি হয়নি, তাই বাবার লাশও দাফন করেনি সন্তানরা

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের দক্ষিণ পাঁচুরিয়ার অম্বলপুর গ্রামের বাসিন্দা ইয়াছিন মোল্লার (৮৫) লাশ পড়ে ছিল নিজ বাড়ির উঠানে। কাফনে মুড়িয়ে রাখা দেহটি দাফনের জন্য ফেলে রাখা ছিল। কারণ, তার রেখে যাওয়া জমি তখনও ভাগ হয়নি তার সন্তানদের মাঝে। এ অবস্থা দেখে ইয়াছিনের মৃত্যুর ২২ ঘণ্টা পর স্থানীয় চেয়ারম্যানের মাধ্যমে সালিস বৈঠকে তার লাশের দাফনের সিন্ধান্ত হয়। তবে, সিদ্ধান্ত হলেও দাফনের আগে পুলিশ এসে লাশ নিয়ে যায় ময়নাতদন্তের জন্য।
স্থানীয়রা জানায়, গতকাল মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় ইয়াছিন মোল্লার মৃত্যু হলেও আজ বুধবার দুপুর ১টা পর্যন্ত বাড়ির উঠানেই পড়ে ছিল তার মরদেহ। জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে ইয়াছিন মোল্লার পাঁচ সন্তানের মধ্যে বাবলু মোল্লা, ফুলবড়ু, রাবেয়া ও মমতাজের সঙ্গে তার ছোট ছেলে রহমান মোল্লার দীর্ঘ দিন ধরেই বিরোধ চলছিল। সেই বিরোধের জেরেই বাবার লাশ দাফন না করে জমির ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়।
ঘটনার ২২ ঘণ্টা পর দেবগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান হাফিজুল ইসলামের হস্তক্ষেপে সালিশের মাধ্যমে বিষয়টির সুরাহা করা হয়। পরে গোয়ালন্দঘাট থানা পুলিশ খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
ইয়াছিন মোল্লার সন্তান বাবলু মোল্লা, ফুলবড়ু, রাবেয়া ও মমতাজ অভিযোগ করেন, ছোট ভাই রহমান মোল্লার কাছে বাবা থাকতেন। দীর্ঘ দিন ধরে থাকার সুযোগে বাবাকে ফুঁসলিয়ে সব সম্পত্তি নিজের নামে লিখে নেন ছোট ভাই রহমান। এ নিয়ে রাজবাড়ী কোর্টে আমরা মামলাও করি। সেই মামলায় গত সোমবার কোর্ট বাবাকে হাজির হতে নির্দেশ দিলেও অসুস্থতার কারণে তিনি উপস্থিত থাকতে পারেননি। বাবাকে ঢাকায় নিয়ে চিকিৎসা করাতে বললেও সে (ছোট ভাই) আমাদের কথা না শুনে স্থানীয় ক্লিনিকে চিকিৎসা করায়। আমাদের ধারণা, রহমান ঘুমের ওষুধ খাইয়ে বাবাকে মেরে ফেলেছে।’
ছোট ছেলে রহমান মোল্লা বলেন, ‘গত শুক্রবার হঠাৎ করে বাবা অসুস্থ হলে তাকে গোয়ালন্দে প্রাইভেট ক্লিনিকে ডাক্তার দেখাই। এ সময় ডাক্তার কিছু টেস্ট ও ওষুধ লিখে দিয়ে বাবাকে বাসায় রেখে চিকিৎসা করাতে বলেন। আমি ডাক্তারের কথা অনুযায়ী বাবাকে বাসায় রেখে চিকিৎসা করাই। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটার দিকে বাবা আরও বেশি অসুস্থ হলে গোয়ালন্দ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে দেখে মৃত ঘোষণা করেন।’
এ বিষয়ে দেবগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান হাফিজুল ইসলাম বলেন, ‘এটা খুবই দুঃখজনক ঘটনা। এ ঘটনা শোনার সঙ্গে সঙ্গেই আমি তাদের বাড়িতে যাই এবং সালিশের মাধ্যমে লকডাউনের পরে সমাধানের কথা বলে স্ট্যাম্পে তাদের উভয়পক্ষের স্বাক্ষর নিয়ে ইয়াছিন মোল্লার দাফনের সিদ্ধান্ত নেই।’
গোয়ালন্দঘাট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমান আকন্দ বলেন, ‘স্থানীয়দের খবরের ভিত্তিতে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে লাশ উদ্ধার করি এবং লাশ ময়নাতদন্তের জন্য রাজবাড়ী হাসপাতাল মর্গে পাঠানোর ব্যবস্থা করি।’

About The Author


Spread the love