জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জের যমুনা চরাঞ্চলে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে সরকারি নিয়মের কোনো বালাই নেই।
খেয়ানৌকার সময় হলেই বিদ্যালয় তালা দিয়ে শিক্ষকরা চলে যান নৌকা ঘাটে।
বৃহস্পতিবার দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার চুকাইবাড়ীর ফুটানীবাজার ঘাট থেকে উত্তাল যমুনা পাড়ি দিয়ে ওপারে নতুন হলকারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়- বিদ্যালয়টি ঘরটি তালা দেওয়া। দুইজন শিক্ষক চলে গেছেন। স্কুলের সামনে বসা চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী হালিমা, তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী আশরাফ, মনিয়াকে জিজ্ঞাসা করা হয়- তোমরা এই স্কুলে পড়।
উত্তরে হ্যাঁ বলে শিশুরা জানায়, ৩-৪ জন ছাত্র আইছিল হেগো ছুটি দিয়ে স্যারেরা চলে গেছে নদীপাড়ে নৌকা ধরতে। একই চরে অবস্থিত ৩-৪ মিনিট হেঁটে গেলেই আরেকটি বিদ্যালয়। বিদ্যালয়টির নাম সাকোয়ার চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
১২টা ১০ মিনিটে বিদ্যালয়ে তালা দিয়ে দুই শিক্ষক খেয়ানৌকার জন্য ঘাটে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। বিদ্যালয় সংলগ্ন কলেজছাত্র তারা মিয়া ও গাড়িচালক আরিফ জানান, খেয়া ধরতে দুই শিক্ষক নদীর পাড়ে গেছেন।
এই প্রতিনিধির উপস্থিতি জানতে পেরে শিক্ষকরা স্কুলে চলে আসেন। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেন জানান, তার স্কুলে পঞ্চম শ্রেণির মাত্র একজন ছাত্র উপস্থিত ছিল। এ সময় তার কাছে ছাত্রটির হাজিরা খাতা দেখতে চাইলে হাজিরা খাতা খুঁজে পাওয়া যায়নি। খাতাটি হাওয়া হয়ে গেছে।
নতুন হলকারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম জানান, করোনায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে গেছে। ছাত্ররা স্কুলে আসতে চায় না। তাই দুই শিক্ষক খেয়ানৌকা ধরার জন্য নদীর পাড়ে গিয়েছিলেন।
দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়, ১৩৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে করোনার আগে শিক্ষার্থী ঝরেপড়ার হার ছিল ৭.৪৫ শতাংশ। করোনার পর ঝরেপড়ার হার হয়েছে ১৩.২৫ শতাংশ।
More Stories
যৌন উত্তেজক ওষুধ বিক্রির নামে প্রতারণা, তিনজন আটক I
এই পদত্যাগে সরকারের কোনো ক্ষতি হবে না: তথ্যমন্ত্রী
শিক্ষকের বেত্রাঘাতে গুরুতর জখম ছাত্র, থানায় মামলা