দেশে গত বছরের ২৭ জানুয়ারি করোনা প্রতিরোধী টিকার প্রথম প্রয়োগ শুরু হয়। ভাইরাসটির সংক্রমণ রোধে সরকার দেশের ৭০ শতাংশ জনগোষ্ঠী অর্থাৎ ১১ কোটি ৭০ লাখ মানুষকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।
এ ধারাবাহিকতায় গত বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি গণটিকা শুরু হওয়া কার্যক্রমের এক বছরে প্রায় দশ কোটি মানুষকে প্রথম ডোজ দেওয়া সম্ভব হয়েছে। শনিবার পর্যন্ত প্রথম বা সিঙ্গেল ডোজ টিকা নিয়েছেন ৯ কোটি ৮৯ লাখ ৩২ হাজার ১০৭ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সংশ্লিষ্টরা যুগান্তরকে বলছেন, করোনা সংক্রমণ রোধে একমাত্র প্রতিষেধক হিসেবে টিকাদান কার্যক্রমকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে করোনা মোকাবিলায় সম্মুখসারীর যোদ্ধাদের টিকাদান প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। সিনিয়র সিটিজেনদেরও অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি স্কুল কলেজ শিক্ষার্থীদের টিকা চলমান রয়েছে। সাধারণ মানুষ ও বস্তিবাসী টিকার আওতায় আনা হয়েছে।
রোবাবার থেকে কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও ভাসমান জনগোষ্ঠি তথা ছিন্নমুল মানুষদেরও টিকাদান শুরু হয়েছে। এদিন সকালে মিরপুরের জামিয়া সিদ্দিকীয়া নূরানী মাদ্রাসার ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী ৫০০ জন ও ১৮ বছরের বেশি উর্দ্ধে ১০০ শিক্ষার্থী টিকা দেওয়া হয়। এছাড়া সন্ধ্যায় কমলাপুর রেলস্টেশনে ভাসমান মানুষের মাঝে টিকা দেওয়া হয়।
কওমি শিক্ষার্থীদের টিকাদান কর্মসূচি পরিদর্শন শেষে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, সরকার সফলতার সঙ্গে টিকা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। শেষ ধাপে সারাদেশে বাদ পড়া সবাইকে খুঁজে বের করে টিকাদান কার্যক্রম চলছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের টিকা কমিটির সদস্য সচিব ডা. শাসমুল হক যুগান্তরকে বলেন, টিকাদানের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে টিকাদান কার্যক্রম বিভাগ, জেলা, উপজেলা এমনকি তৃণমূল পর্যায়ের কমিউনিটি ক্লিনিকেও পৌঁছে গেছে। ফলে এ কার্যক্রমে গতিশীলতা বাড়িয়েছে। দেশে এখন পর্যন্ত ২৪ কোটি টিকা এসেছে। হাতে এখনও পাঁচ কোটি টিকা মজুত রয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর দেওয়া টিকা আপডেট পর্যালোচনা করে দেখা যায় দেশে ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় ডোজ টিকাদানের সংখ্যা ১৬ কোটি ৫৫ লাখ ৬ হাজার ১৪ দাঁড়িয়েছে। এরমধ্যে প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছেন ৯ কোটি ৮৯ লাখ ৩২ হাজার ১০৭ জন। দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ৬ কোটি ৪৬ লাখ ৮ হাজার ৫৩৫ জন। এছাড়া ১৯ লাখ ৬৫ হাজার ৩৭২ জন বুস্টার ডোজ নিয়েছেন।
দেশে গত বছরের ২৭ জানুয়ারি রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নার্স রুনু ভেরোনিকা কস্তাকে পরীক্ষামূলকভাবে টিকা দেওয়া হয়। এর দশদিন পর ৭ ফেব্রুয়ারি গণটিকা শুরু হয়। মাত্র ১ বছরের মধ্যে প্রথম এবং দ্বিতীয় ডোজ মিলিয়ে ১৬ কোটি ডোজ টিকা প্রদানের মাইলফলকে পৌঁছেছে। এর মধ্যে প্রথম ডোজের আওতায় চলে এসেছে প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ। আর দুই ডোজ পেয়েছেন অন্তত ৫০ শতাংশ।
More Stories
২০ ডিসেম্বর থেকে করোনা টিকার চতুর্থ ডোজ
এই পদত্যাগে সরকারের কোনো ক্ষতি হবে না: তথ্যমন্ত্রী
মৃত্যু বেড়ে ১০৭ দেশে বন্যায়