মাঠে তো অনাকাঙ্ক্ষিত কত কিছুই হয়। সেসব সইতে না পেরে অনেকের মেজাজ সপ্তমে চড়ে। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে জার্সি কিংবা আর্মব্যান্ড ছুড়ে ফেলেন অনেকেই। কিন্তু সবাই তো আর ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো নন যে ছুড়ে ফেলা জিনিসও নিলামে উঠবে।লোকটার নাম ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো বলেই তাঁর ছুড়ে ফেলা আর্মব্যান্ডও নিলামে উঠেছে এবং তা নিয়ে কাড়াকাড়ি পড়েছে আগ্রহী ক্রেতাদের মধ্যে। বিক্রির পর এই অর্থ সার্বিয়ার এক শিশুর জীবন বাঁচানোর কাজে লাগানো হবে।সার্বিয়ার রেড স্টার স্টেডিয়ামে ২-২ গোলে ড্র করে পর্তুগাল। একেবারে শেষ মুহূর্তে রোনালদোর গোল দৃশ্যত অন্যায্যভাবে বাতিল না হলে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারত পর্তুগাল। ভিডিও রিপ্লেতে দেখা যায়, রোনালদোর গোলের দাবি ন্যায্য ছিল। এর মধ্যে বিরক্তি প্রকাশের জন্য রেফারির হলুদ কার্ডও দেখেন পর্তুগাল অধিনায়ক।
সব মিলিয়ে খেপে গিয়ে অধিনায়কত্বের আর্মব্যান্ড মাঠে ছুড়ে ফেলে তখনই ড্রেসিংরুমে চলে যান রোনালদো। অথচ তখনো ম্যাচ শেষ হওয়ার কয়েক সেকেন্ড বাকি! তবে তাঁর এই রাগ এখন হয়তো জীবন বাঁচাবে মেরুদণ্ডের পেশির জটিল রোগে ভোগা ছয় মাস বয়সী এক শিশুর।
মাঠে রোনালদোর ফেলে যাওয়া এই আর্মব্যান্ড কুড়িয়ে পান রেড স্টার স্টেডিয়ামের এক কর্মী। তাঁর কাছ থেকেই আর্মব্যান্ড পায় সার্বিয়ার একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠান, যারা অসুস্থ সেই শিশুর চিকিৎসার খরচ তোলার চেষ্টা করছে। কাল এই আর্মব্যান্ড তিন দিনের জন্য নিলামে তোলা হয়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অসমর্থিত সূত্র জানিয়েছে, শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত রোনালদোর এই আর্মব্যান্ডের দাম উঠেছে ৮ লাখ ৫১ হাজার ইউরো। সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) জানিয়েছে, গাভ্রিলো দুরদিয়েভিচ নামের অসুস্থ সেই শিশুর অস্ত্রোপচার ও পুরো চিকিৎসার খরচ নির্বাহে প্রায় আড়াই লাখ ইউরো লাগবে।নিলামকারী প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে বলা হয়, ‘গাভ্রিলো দুরদিয়েভিচ নামের ছয় মাস বয়সী শিশুর চিকিৎসার জন্য অর্থ সংগ্রহ করা হচ্ছে। সে স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাট্রোফি রোগে ভুগছে, চিকিৎসা করে তার জীবন বাঁচাতে আড়াই লাখ ইউরো প্রয়োজন।’ সার্বিয়ান সংবাদমাধ্যম ‘টেলেগ্রাফ’ জানিয়েছে, নিলামে প্রথম দিনেই খেলাধুলার স্মারক বিক্রির (টাকায়) সার্বিয়ান রেকর্ড ভেঙে দেয় রোনালদোর আর্মব্যান্ড। এই আর্মব্যান্ড বেচে প্রয়োজনীয় অর্থ পাওয়ার আশা করছে সার্বিয়ান সংবাদমাধ্যম।জুভেন্টাসের এই পর্তুগিজ তারকা অবশ্য আর্মব্যান্ড ছুড়ে ফেলার জন্য সমালোচনাও কুড়িয়েছেন। অনেকে মনে করছেন, ফিফা তাঁকে শাস্তিও দিতে পারে। জুভেন্টাসেরই সাবেক ইতালিয়ান স্ট্রাইকার আলেসান্দ্রো দেল পিয়েরোর যেমন রোনালদোর আর্মব্যান্ড ছুড়ে ফেলা পছন্দ হয়নি, ‘আমার মতে, আচরণটি সীমা ছাড়িয়ে গেছে। রাগ হতেই পারে, সে জন্য মাঠে কথা বলা যায় কিংবা প্রতিবাদ করা যায়। কিন্তু দেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন এমন একজন, যিনি কিনা আবার পৃথিবীর অন্যতম জনপ্রিয় আইকন, তাঁর এমন আচরণ মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।
সে যা-ই হোক, রাগ থেকে যদি ভালো কিছু হয়, তবে রোনালদোর রাগ মন্দ নয়
More Stories
হারলে সিরিজ হাতছাড়া
প্রথম নারী রেফারি ফুটবলে
চারশর নিচে থামাতে চায় বাংলাদেশ