প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষা এবং শান্তির সংস্কৃতি বিনির্মাণে অবদান রেখে চলেছে। সংঘাত-প্রবণ দেশসমূহে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও শান্তি বজায় রাখতে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। আমাদের শান্তিরক্ষীরা যে মিশনেই গেছেন, সেখানে জাতিসংঘের পতাকাকে সমুন্নত ও উড্ডীন রাখার পাশাপাশি বাংলাদেশের ভাবমূর্তি সমুজ্জ্বল করেছেন।
বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সহযোগিতায় বাংলাদেশের দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ বিশ্বের যে কোনো প্রান্তে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সদা প্রস্তুত রয়েছে।
‘আমরা জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের অধীনে বিশ্বের যে কোন প্রান্তে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সদা প্রস্তুত। এটা জাতিসংঘকে আমি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিতে চাই,’ প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবসের এই দিনে বিশ্বের সকল শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা গর্বের সঙ্গে স্মরণ করে এ কথা বলেন।
তিনি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস-২০২১ উপলক্ষে প্রধান অতিথির ভাষণ দিচ্ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ অপরাহ্ণে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে ‘আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবসের মূল অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন।
তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি, আমাদের সশস্ত্র বাহিনী এবং পুলিশ বাহিনীর তরুণ সদস্যরা ২১ শতকের বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত আছে। আগামীতেও যারা আসবে তাদেরকে আমরা সেভাবেই তৈরি করতে চাই।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০২১ সালের আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী দিবসের প্রতিপাদ্য ‘দি রোড টু এ লাস্টিং পিস: লেভারেজিং দ্যা পাওয়ার অব ইয়োথ ফর পিস এন্ড সিকিউরিটি’-কে সামনে রেখে আমরা তরুণ এবং যুবশক্তিকে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠার অন্যতম নিয়ামক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। কারণ, আমাদের তরুণ সমাজ তারাও যেন এটা শিক্ষা গ্রহণ করে যে শান্তি একমাত্র উন্নয়ন ও নিরাপত্তার পথ। শান্তিই মানুষের কল্যাণের পথ এবং সেই পথে যেন সকলে যেতে পারে এবং সেভাবেই যেন নিজেরা তৈরি হয়।
তিনি বলেন, এই মুহূর্তে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় নিয়োজিত ১২২টি দেশের ৮০ হাজার ১৮৪ জন শান্তিরক্ষীর মধ্যে ৬ হাজার ৭৪২ জন বাংলাদেশের শান্তিরক্ষী রয়েছে। এই সংখ্যা বিশ্বে নিয়োজিত মোট শান্তিরক্ষীর ৮ দশমিক ৪০ শতাংশ যা আমাদের জন্য অত্যন্ত গৌরবের। এছাড়াও, বর্তমানে বাংলাদেশের ২৮৪ জন নারী শান্তিরক্ষী বিশ্ব শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে নিয়োজিত আছেন। বিশেষ করে আমার নারী পাইলটদের নিয়ে আমি খুব গর্ববোধ করি। কারণ, আগে আমাদের সেনা-নৌ ও বিমানবাহিনীতে নারীদের কোনো স্থান ছিল না। পুলিশ বাহিনীতে অদম্য জাতির পিতাই নারী অফিসার নিয়োগ করে গিয়েছিলেন। তবে, সব জায়গাতেই এখন নারীদের একটা ভাল সুযোগ রয়েছে এবং তারা সাফল্য দেখাচ্ছে। কাজেই, আমি আমাদের মেয়েদেরকেও অভিনন্দন জানাই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের শান্তিরক্ষীরা ৪০টি দেশে ৫৫টি ইউএন মিশন সফলতার সঙ্গে সম্পন্ন করেছে। বর্তমানে ৮টি মিশনে আমাদের শান্তিরক্ষীরা নিয়োজিত আছেন। এছাড়া দক্ষিণ সুদানে ডেপুটি ফোর্স কমান্ডার হিসেবে মেজর জেনারেল পদবীর কর্মকর্তা এবং কঙ্গো, সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক ও দক্ষিণ সুদানে সেক্টর কমান্ডার হিসেবে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পদবীর কর্মকর্তা নিযুক্ত রয়েছেন। তাদের দক্ষতার কারণেই তারা এই পদ পেয়েছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ, বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি মিয়া সেপ্পো অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। মিয়া সেপ্পো অনুষ্ঠানে জাতিসংঘ মহাসচিব এন্তনিও গুতেরেজের একটি বার্তাও পড়ে শোনান।
প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠান থেকে দক্ষিণ সুদান, কঙ্গো, সেন্ট্রাল আফ্রিকা রিপাবলিক এবং লেবাননে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষী কন্টিনজেণ্টের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে মত বিনিময় করেন এবং দেশের কেবল প্রধানমন্ত্রী নয় জাতির পিতার কন্যা হিসেবে তাদের সবসময় সবরকম সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস প্রধান করেন।
অনুষ্ঠানে তিনি জাতির পিতার জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে একটি সুভ্যেনির এবং এবং ইউএন পিস কিপার্স জার্নালের একটি সংখ্যার মোড়ক উন্মোচন করেন।
বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় আত্মত্যাগকারী বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে অনুষ্ঠানের শুরুতে সকলে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন।
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ নিয়ে ‘বাংলাদেশ ইন গ্লোবাল পিস’ শীর্ষক এবটি ভিডিও ডকুমেন্টারিও অনুষ্ঠানে প্রচারিত হয়।
গত এক বছরে বিশ্ব শান্তি স্থাপনে শহীদ এবং আহত সদস্য এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন পুরস্কার বিতরণ করে অনুষ্ঠানে তাদের সম্মানিত করেন।
প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া গণভবন প্রান্তে এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনী প্রধান, পুলিশের আইজিপিসহ ঊর্ধ্বতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা এবং সাবেক সশস্ত্র বাহিনী ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এবং আমন্ত্রিত দেশি ও বিদেশি অতিথিবৃন্দ সেনাকুঞ্জে উপস্থিত ছিলেন।
কোভিড-১৯ মানুষকে ভীষণ কষ্ট দিচ্ছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা তার ভাষণে বলেন, আমাদের যারা শান্তিরক্ষী রয়েছেন সবাইকে আমি বলব- এই সময় খুব শান্ত ও ধীর-স্থির ভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে। কারণ, সব দেশেই একটা অসহিষ্ণুতা, অনিশ্চয়তা দেখা দিচ্ছে। আল্লাহর ওপর বিশ্বাস রাখতে হবে। আর আমরা যে শান্তির সংস্কৃতিতে বিশ্বাস করি, সে কথা সবসময় মনে রাখতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার সবথেকে ভাল লাগে যেখানে যেখানে আমাদের শান্তিরক্ষীরা কাজ করেছেন সেদেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে যখনই কোনো আন্তর্জাতিক ফোরামে দেখা হয়েছে, আমাদের শান্তিরক্ষীদের তারা ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। গর্বে বুক আমার ভরে গেছে।’
তিনি বলেন, যে সম্মানটা আমরা পেয়েছি, সেটা ধরে রেখেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। জাতির পিতা যে আদর্শ নিয়ে এ দেশ স্বাধীন করে গেছেন, সেই আদর্শ নিয়েই আমরা দেশকে পরিচালনা করছি। ইনশাল্লাহ বাংলাদেশ সারবিশ্বে উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ হিসেবেই গড়ে উঠবে।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী এবং পুলিশ বাহিনীর সকল শান্তিরক্ষীদের বিশ্বব্যাপী শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে তাদের বর্তমান পেশাদারিত্ব, সততা, নিষ্ঠা ও আন্তরিকতা বজায় রাখার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানাই। প্রয়োজনীয় সকল সরঞ্জামসহ বাংলাদেশের সকল শান্তিরক্ষী যাতে আরও আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে জাতিসংঘের আহ্বানে সাড়া দিতে পারে, সে জন্য আমাদের সরকারের সকল প্রয়াস অব্যাহত থাকবে। বিশ্ববাসীর পাশাপাশি বাংলাদেশের জনগণ বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় আপনাদের এই ভূমিকা চিরকাল স্মরণ করবে।
তিনি আরও বলেন, আপনারা বাংলাদেশকে বিশ্বে একটি শক্তিশালী শান্তি প্রতিষ্ঠাকারী দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবেন এবং বিশ্বে বাংলাদেশের পতাকাকে সমুন্নত রাখবেন। মনে রাখবেন, এই পতাকা লাখো শহীদের রক্তে রঞ্জিত একটি পতাকা। এটা আমাদের গর্ব। কাজেই আমরা সবসময় এটাই চাই এই পতাকা যেন সবসময় সমুন্নত থাকে।
শান্তিরক্ষা মিশনে ১৯৮৮ সাল থেকে এ পর্যন্ত অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশের ১৫৯ জন শান্তিরক্ষী শহীদ এবং ২৪০ জন আহত হয়েছেন। সম্প্রতি শান্তিরক্ষা মিশনে কর্তব্যরত অবস্থায় আত্মোৎসর্গকারী ৮ বাংলাদেশীকে জাতিসংঘের হ্যামারশোল্ড পদকে ভূষিত করা হয়। যা একক দেশ হিসেবে সর্বোচ্চ।
প্রধানমন্ত্রী কোভিড-১৯ পরিস্থিতি সম্পর্কে বলেন, বিশ্বের অনেক উন্নত দেশ যেখানে হিমসিম খাচ্ছে কিন্তু বাংলাদেশে সবাই যাতে নিরাপদ থাকতে পারে এবং করোনাভাইরাসের কারণে যাতে বেশি প্রাণহানী না হয় বা প্রাদুর্ভাব বেশি না ছড়ায় তার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
পাশাপাশি, আর্থসামাজিক কর্মকাণ্ড যেন স্থবির না হয়ে যায় সেদিকে লক্ষ্য রেখেই বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে এবং সফলতার সঙ্গে তা এগিয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে উন্নীত হয়েছে, বলেন তিনি।
উন্নয়নের এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, জনগণের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়েছে, খাদ্যের সঙ্গে জনগণের পুষ্টি চাহিদা মেটানোর চেষ্টা চলছে। করোনার কারণে শিক্ষাক্ষেত্রে যে সমস্যা চলছে তা দূর করতেও তার সরকার উদ্যোগ নেবে।
শান্তিরক্ষীদের প্রশিক্ষণ এবং উন্নত সরঞ্জামাদির পাশাপাশি তাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থাটাও যাতে সথাযথভাবে নেওয়া হয় সেজন্য তার সরকার সচেষ্ট উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যেখানেই আমরা দেখছি নিরাপত্তার কোনো সমস্যা রয়েছে সেখানে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করবার মত উপযুক্ত যা যা প্রয়োজন আমরা সঙ্গে সঙ্গে সেটা সরবরাহ করার ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে যারা নিয়োজিত তারা যেন নিজ পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পারে ইতোমধ্যেই সে উদ্যোগ সরকার নিয়েছে উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, ‘দুর্গম এলাকাতেও ভি-স্যাটের মাধ্যমে ব্যয়বহুল ইন্টারনেট সংযোগ প্রদান করা হয়েছে। বাংলাদেশী শান্তিরক্ষীদের অধিকতর নিরাপত্তা প্রদানের জন্য কন্টিনজেন্টসমূহে এলএভি অ্যাম্বুলেন্স, আইইডি জ্যামারসহ মাইন রেজিস্ট্যান্ট অ্যাম্বুশ প্রোটেকটেড ভেহিক্যাল (এমআরএপি) সংযোজন করা হয়েছে। কারণ, যারা নিরাপত্তায় কর্মরত রয়েছেন, তাদের নিরাপত্তার বিষয়টিও দেখা আমাদের একান্তভাবে দরকার।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার জন্মশতবর্ষ ও আমাদের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে আমরা এক নম্বর শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ’ হিসেবে গৌরবের ৩৩ বছর উদযাপন করছি। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনে বিগত ৩৩ বছর ধরে বাংলাদেশের প্রতিটি শান্তিরক্ষী ত্যাগ-তিতিক্ষা এবং গর্বের সঙ্গে তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব সফলতার সঙ্গে পালন করে বিশ্ব শান্তি রক্ষায় অনেক গৌরবময় অবদান রেখে যাচ্ছেন।
বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের কথাও শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কেবল বাঙালি জাতিরই নন, তিনি ছিলেন বিশ্বের নির্যাতিত, নিপীড়িত ও শোষিত মানুষের মুক্তির বার্তাবাহক ও শান্তির দূত। বিশ্বশান্তি ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় অসামান্য অবদানের জন্য ১৯৭৩ সালের ২৩ মে বিশ্বশান্তি কাউন্সিল জাতির পিতাকে ‘জুলিও কুরি’ শান্তি পুরস্কার প্রদান করে। জাতির পিতার বিশ্বশান্তির দর্শন প্রতিফলিত হয়েছিল ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘে প্রদত্ত ভাষণে। ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়’-ঘোষণার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের অবস্থান সুদৃঢ় করেন। অতি সম্প্রতি ভারত সরকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে ‘গান্ধী শান্তি’ পুরস্কারে ভূষিত করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশকে আমরা চাই আরও উন্নত সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে এবং আমি তাই মনে করি, সেজন্য বাংলাদেশকে সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব বজায় রেখেই চলতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষের অর্থনৈতিক উন্নতি করা, দারিদ্র দূর করা, বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য তাদের শিক্ষা-দীক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা থেকে শুরু করে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা ব্যাপকভাবে করা। তাদের সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলাটাই আমাদের কাজ।
শেখ হাসিনা বলেন, সেক্ষেত্রে আমি বলবো যারা বিশ্বশান্তি রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছেন তারা বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্বই করছেন একভাবে এবং বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আপনারা উজ্জ্বল করছেন।
পরিবার পরিজন ফেলে বিদেশে বৈরি পরিবেশে বিশ্বশান্তি রক্ষায় কাজ করে যাওয়াকে অন্যতম চ্যালেঞ্জিং একটি কাজ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই চ্যালেঞ্জ নেওয়াতেও একটা সাহস প্রয়োজন, আন্তরিকতা প্রয়োজন। সেটাও আপনারা অত্যন্ত সফলভাবে করে যাচ্ছেন।’
তিনি বলেন, আমরা দেখেছি অনেক জটিল অবস্থায় অনেক দেশ যেতে চায় না। কিন্তু, যখন আমাদের কাছে বলা হয়েছে, তখন আমি বলেছি, হ্যাঁ, আমরা বাঙালিরা যে কোনো জটিল অবস্থা, যে কোনো বৈরি পরিবেশ মোকাবিলা করবার মতো সাহস রাখি। কাজেই, আমাদের শান্তিরক্ষীরা পারবে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার মনে হয়, সব থেকে সংঘাতপূর্ণ জায়গা, সবথেকে জটিল জায়গাগুলোতেই আজকে আমাদের শান্তিরক্ষীবাহিনী বিশেষ অবদান রেখে যাচ্ছেন। সেজন্য আপনাদেরকে আমার আন্তরিক অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’
More Stories
২০ ডিসেম্বর থেকে করোনা টিকার চতুর্থ ডোজ
এই পদত্যাগে সরকারের কোনো ক্ষতি হবে না: তথ্যমন্ত্রী
মৃত্যু বেড়ে ১০৭ দেশে বন্যায়